কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ রচিত **মনসামঙ্গল কাব্যে** বেহুলা ও লক্ষ্মীন্দর চরিত্র পরিচিতি

 কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ রচিত **মনসামঙ্গল কাব্যে** বেহুলা ও লক্ষ্মীন্দর বাংলা লোকসাহিত্যের জনপ্রিয় চরিত্র। এই কাব্যে তাঁদের পূর্ব পরিচয় এবং কাহিনির সূচনা উল্লেখযোগ্য।


### বেহুলার পরিচয়:

বেহুলা ছিল চাঁদ সদাগরের কন্যাসম শাশুড়ি। তার পিতা সায়েবান নগরের শ্রীকান্ত। বেহুলা অসাধারণ সৌন্দর্য এবং পবিত্র চরিত্রের জন্য বিখ্যাত। তিনি একজন আদর্শ পতিব্রতা নারী হিসেবে পরিচিত। তার চরিত্রের মূল বৈশিষ্ট্য হলো স্বামীর প্রতি একনিষ্ঠ ভালোবাসা এবং তার জীবন বাঁচাতে যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করার দৃঢ় সংকল্প।


### লক্ষ্মীন্দরের পরিচয়:

লক্ষ্মীন্দর ছিলেন চাঁদ সদাগরের পুত্র। মনসা দেবীর সঙ্গে চাঁদ সদাগরের দ্বন্দ্ব এবং পূজার প্রতি অবজ্ঞার কারণে মনসা দেবী লক্ষ্মীন্দরকে অভিশপ্ত করেছিলেন। এই অভিশাপের ফলে লক্ষ্মীন্দরের বিয়ের রাতে বিষধর সাপ তাকে দংশন করে।


### পূর্বকাহিনি:

- **মনসা দেবীর রোষ**: চাঁদ সদাগর মনসা দেবীর পূজা অস্বীকার করেন। দেবী মনসা তার পরিবারে নানা বিপদ আনেন। 

- **বেহুলা-লক্ষ্মীন্দরের বিবাহ**: লক্ষ্মীন্দর ও বেহুলার বিয়ে হয় সগৌরবে। কিন্তু মনসার অভিশাপের কারণে বিয়ের রাতেই বিষধর সাপ লক্ষ্মীন্দরকে দংশন করে হত্যা করে।

- **বেহুলার যাত্রা**: লক্ষ্মীন্দরের প্রাণ ফিরিয়ে আনতে বেহুলা স্বর্গে যাত্রা করেন। পথে নানা বিপদ-বিঘ্ন মোকাবিলা করে তিনি তার পতির প্রাণ ফিরিয়ে আনেন এবং চাঁদ সদাগরকে মনসা দেবীর পূজা করতে রাজি করান।


### এই অংশে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষণীয় দিক:

- বেহুলার পতিব্রতা ধর্ম এবং ত্যাগের মহিমা।  

- দেবতা এবং মানুষের সম্পর্কের জটিলতা।  

- মনসা দেবীর শক্তি এবং তাঁর প্রতি চাঁদ সদাগরের পূজা অস্বীকারের প্রতিক্রিয়া।  


এই কাহিনি বাঙালি লোকসাহিত্যের চিরন্তন কাব্যিক ও নৈতিক দৃষ্টান্ত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

শ্রীচৈতন্যচরিত গ্রন্থের মোট খন্ড ও পরিচ্ছেদ সংখ্যা লেখ

কি মোহিনী জানো বধু কি মোহিনী জানো