"অবতারের আরেক আছে মুখ্য বীজ" মুখ্য বীজ কি

 "অবতারের আরেক আছে মুখ্য বীজ" বাক্যটি শ্রীকৃষ্ণ এবং শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর জীবন ও দর্শনের আলোচনায় ব্যবহৃত একটি গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য। এখানে "মুখ্য বীজ" বলতে মূলত সেই মূল কারণ বা প্রধান তত্ত্বকে বোঝানো হয়েছে, যা অবতারধারণের মূল উদ্দেশ্যকে নির্ধারণ করে।

মুখ্য বীজের অর্থ:

  1. পরম করুণা ও প্রেমের প্রসার:
    শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু ছিলেন প্রেমভক্তি বা ভক্তিরসের প্রচারক। অবতারধারণের মুখ্য উদ্দেশ্য হলো জীবের প্রতি পরম করুণা এবং তাঁদের মধ্যে শুদ্ধ ভক্তি, প্রেম এবং ভগবৎসেবা জাগ্রত করা।

  2. ধর্ম প্রতিষ্ঠা:
    অবতার হিসেবে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর "মুখ্য বীজ" ছিল ধর্মের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। এটি গীতার তত্ত্বের সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ—যখনই ধর্ম ক্ষীণ হয় এবং অধর্ম বৃদ্ধি পায়, তখন ভগবান অবতারে আবির্ভূত হন।

  3. হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র প্রচার:
    শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু অবতারধারণের মাধ্যমে এই যুগে (কলিযুগে) ভগবানকে স্মরণ করার সহজ উপায় হিসেবে হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্রের প্রচার করেন। এটি তাঁর অবতারের মূল বীজ বা লক্ষ্য।

  4. ভক্তিরসের চরম স্বাদ গ্রহণ:
    শ্রীকৃষ্ণ, শ্রীমতী রাধার প্রেম উপলব্ধি করতে চেয়েছিলেন। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু রাধার প্রেমের গভীরতা এবং ভক্তিরসের চরম অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য অবতীর্ণ হন।

সারসংক্ষেপ:

"মুখ্য বীজ" হলো ভক্তি, প্রেম, করুণা এবং ধর্মের পুনঃপ্রতিষ্ঠার সেই প্রধান তত্ত্ব বা উদ্দেশ্য, যা অবতারধারণের ভিত্তি। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর ক্ষেত্রে এটি ছিল ভক্তিরসের প্রচার এবং জীবকে ভগবৎ প্রেমে উদ্বুদ্ধ করা।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ রচিত **মনসামঙ্গল কাব্যে** বেহুলা ও লক্ষ্মীন্দর চরিত্র পরিচিতি

শ্রীচৈতন্যচরিত গ্রন্থের মোট খন্ড ও পরিচ্ছেদ সংখ্যা লেখ

কি মোহিনী জানো বধু কি মোহিনী জানো