বৈষ্ণব পদাবলীতে পূর্বরাগ বলতে কী বোঝো

 **বৈষ্ণব পদাবলীতে "পুর্বরাগ"** একটি বিশেষ ধরনের ভক্তিরস বা আবেগ, যা শ্রীকৃষ্ণ বা দেবীর প্রতি পূর্বের গভীর আকাঙ্ক্ষা ও প্রেমের অনুভূতি হিসেবে প্রকাশ পায়। এটি মূলত একটি ভক্তির ধারা, যেখানে ভক্ত নিজের অন্তরকে শুদ্ধ করতে এবং ঈশ্বরের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে পুণ্য প্রেমের অনুভূতি অনুভব করেন।  


### পুর্বরাগের অর্থ:

**পুর্বরাগ** শব্দটির অর্থ হচ্ছে "প্রাক-বিরহ" বা "ভক্তি ও প্রেমের শুরুর অনুভূতি", যা ঈশ্বরের প্রতি প্রবল আকাঙ্ক্ষা এবং প্রত্যাশা জাগিয়ে তোলে। এটি শ্রীকৃষ্ণ বা রাধার প্রতি বিরহ বা বিচ্ছেদের আগের আবেগপূর্ণ অনুভূতি, যেখানে ভক্ত ঈশ্বরের মায়াময় রূপের প্রতি আকৃষ্ট হয় এবং তাঁর প্রেমের প্রতি গভীর আকাঙ্ক্ষা অনুভব করে।


### বৈষ্ণব পদাবলীতে পুর্বরাগ:

বৈষ্ণব পদাবলীতে **পুর্বরাগ** হলো সেই প্রাথমিক প্রেম বা অনুভূতি, যা ভক্ত ঈশ্বরের প্রেমে পতিত হওয়ার আগে অনুভব করেন। এটি একটি দুঃখময় অনুভূতি, যা বেদনার আকারে ভক্তের অন্তরে উত্থিত হয়, কারণ ঈশ্বরের উপস্থিতি বা আশীর্বাদ থেকে তিনি পৃথক বা বিচ্ছিন্ন।


এটি এক ধরনের গভীর প্রেমের আগ্রহ, যা পরবর্তীতে পূর্ণ প্রেমে পরিণত হয়। পুর্বরাগের অবস্থায়, ভক্ত ঈশ্বরের সাথে মিলনের বা দর্শনের আকাঙ্ক্ষা অনুভব করে, কিন্তু তা পূর্ণতার আগেই কিছুটা বিরহ বা বিচ্ছেদ থাকে। 


### উদাহরণ:

বৈষ্ণব পদাবলীতে, বিশেষত শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর পদাবলীতে পুর্বরাগের অনুভূতি ফুটে ওঠে। ভক্তরা ঈশ্বরের প্রেমে আগ্রহী হয়ে, তাঁর দর্শনের বা দেহের সান্নিধ্যের অপেক্ষায় থাকেন। এই অনুভূতি পরবর্তীতে পূর্ণ প্রেমে পরিণত হয়।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ রচিত **মনসামঙ্গল কাব্যে** বেহুলা ও লক্ষ্মীন্দর চরিত্র পরিচিতি

শ্রীচৈতন্যচরিত গ্রন্থের মোট খন্ড ও পরিচ্ছেদ সংখ্যা লেখ

কি মোহিনী জানো বধু কি মোহিনী জানো